History of Computer
History of Computer
History of Computer ( কম্পিউটার এর ইতিহাস )
প্রিয় বন্ধুরা, কম্পিউটারের ইতিহাস জানার আগে আমরা জেনে নিই কম্পিউটার কি - এই প্রশ্নের উত্তর আমরা এভাবে দিতে পারি - কম্পিউটার একটি আধুনিক ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র যার সাহায্যে কঠিন ও সরল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা যায় । অন্যভাবে বলতে গেলে বলতে হয় কম্পিউটার এমন একটি যন্ত্র যা ইনপুট যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে তা প্রসেসিং ইউনিটে পাঠায় তারপর তা প্রক্রিয়া করে ব্যবহারকারীর তথ্যকে আউটপুট যন্ত্রের মাধ্যমে প্রেরন করে এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য মেমোরিতে জমা রাখে ।History of Computer
এখন আমরা কম্পিউটারের ইতিহাস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে জানব -আজ থেকে হাজার বছর আগে মানুষ এক জনের সাথে আরেকজন লেনদেনের জন্য পণ্য বিনিময় করতো । মানুষ প্রথম গণনাকারী যন্ত্র হিসেবে টালি ব্যবহার করেছে (খ্রিষ্টপূর্ব ২৩-৭৯) সালে প্রাচীন চীন দেশে যার বর্ণনা এসেছে ঐতিহাসিক প্লিনি এবং মার্কো পোলো (১২৫৪-১৩২৪) লেখায় । হিসাবের কাজ ছাড়াও টালি ব্যবহার করা হত সময়সূচী, বার্তা প্রেরণ, আইনি লেনদেন করার কাজে । প্রাচীন আরব দেশেও গণনা যন্ত্র ব্যবহার করতো তারা বিভিন্ন ধরনের কৃষি কাজে একদরনের ছোট কাঠি ব্যবহার করতো যার সাহায্যে দিন, মাস, ও বছরের হিসাব রাখতো । গাণিতিক হিসাব করার যন্ত্র হিসেবে প্রাচীন রোমান দেশে আনুমানিক ২৪০০ খ্রিষ্টপূর্ব সালে আবাকাস নামক যন্ত্র ব্যবহার করা হতো । যার সাহায্যে যোগ বিয়োগ করা যেতো । একই সময় চীনে সুয়াপান নামক গণনা যন্ত্র ব্যবহৃত হতো । এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরণের গাণিতিক যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছিল ।
Fig: Abacus First Calculating Device
প্রথম কম্পিউটার যন্ত্র
ইংরেজ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার চার্লজ ব্যাবেজ প্রথম কম্পিউটার আবিস্কার করেন যার নাম ডিফারেন্ট ইঞ্জিন । এই আবিস্কারের জন্য তাকে কম্পিউটারের জনক বলা হয় । ১৯ শতকের তিনি প্রথম মেকানিক্যাল কম্পিউটার এর ধারনা দেন। যার ফলে ১৮৩৩ এন্যালাইটিক্যাল ইঞ্জিন আবিষ্কৃত হয় । এই যন্ত্রে দুইটি সংখ্যার যোগ বিয়োগ করে ফলাফল প্রদর্শন করা যেতো।
Fig: Difference Engine
ICT Job Solutions
অ্যানালগ কম্পিউটার
২০ শতকের প্রথম অর্ধে বৈজ্ঞানিক হিসাবের প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক ভাবে দেখা দিলো যার ফলে মেকানিক্যাল ও ইলেক্ট্রিক্যাল মডেল এর ভিত্তিতে অ্যানালগ কম্পিউটার তৈরি হয়। এটা আধুনিক ডিজিটাল প্রোগ্রাম সম্বলিত কম্পিউটার এর মত সঠিক হিসাব দিতে পারত না । ১৮৭২ সালে স্যার উইলিয়াম থমসন প্রথম আধুনিক এনালগ কম্পিউটার আবিস্কার করেন যার নাম টাইড প্রেডিক্টিং মেশিন । ১৮৭৬ সালে জেমস থমসন ডিফারেন্সিয়াল এনালাইজার নামক অ্যানালগ কম্পিউটার আবিস্কার করেন যার সাহায্যে ডিফারেন্সিয়াল ও ইন্ট্রিগ্রেশন এর সমস্যার সমাধান করা যেতো। তিনি এই কাজে হুইল ডিক্স মেকানিজম ব্যবহার করেছেন।
ডিজিটাল কম্পিউটার
ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল কম্পিউটার
১৯৩৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর নৌ বাহিনী সাবমেরিন পরিচালনা করার জন্য ছোট আকারের ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল এনালগ কম্পিউটার তৈরি করে । ইহা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল। ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল কম্পিউটার অনেক ধিরে কাজ করত কারন এটাতে গণনার কাজে ইলেকট্রিক সুইচ এবং মেকানিক্যাল রিলে ব্যবহার করা হত । ১৯৪১ সালে জার্মান বিজ্ঞানী কনরাড জুসি প্রথম পুরাপুরি অটোমেটিক ডিজিটাল প্রোগ্রামেবল ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরি করেন যার নাম দেন Z3 । এই কম্পিউটারে ২০০০ রিলে ব্যবহার করা হয় । এর সাহায্যে ২২ বিট শব্দ অপারেট করা যেত আর এর ক্লক ফ্রিকুয়েন্সি ছিল ৫-১০ হার্জ । পাঞ্চ কার্ডের সাহায্যে ডাটা জমা রাখার ব্যবস্থাও ছিল । যার ধারন ক্ষমতা ছিল ৬৪ শব্দ ।
Fig:Z3 First Fully Automatic Digital Electro Mechanical Computer
ভ্যাকুয়াম টিউব ও ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট
১৯৪২ জন ভিনসেন্ট এটান্সফ ও ক্লিফোর্ড ই ব্যারি লোয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম অটোমেটিক ইলেক্ট্রনিক ডিজিটাল কম্পিউটার আবিস্কার করেন যার নাম এটান্সফ ব্যারি কম্পিউটার বা এবিসি । ইলেক্ট্রনিক্স ভিত্তিক ডিজাইন এবং ৩০০ ভ্যাকুয়াম টিউব সাথে ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয়েছে , মেমোরি ধরে রাখার জন্য মেকানিক্যালি রোটেটিং ড্রাম ব্যবহার করা হয়েছে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যের গণিতজ্ঞ ম্যাক্স নিউমান ও তার বন্ধু ফ্লাওয়ার কলসাস বা মার্ক ১ নামক বিশ্বের প্রথম ইলেক্ট্রনিক ডিজিটাল প্রোগ্রামেবল কম্পিউটার আবিস্কার করেন যার সাহায্যে জার্মান সেনা বাহিনির ম্যাসেজ ভাঙতে সক্ষম হন । মার্ক ১ বিপুল পরিমান ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় ১৫০০০ এর ইনপুট হিসেবে পেপার টেপ ব্যবহার করা হত এবং বিভিন্ন ধরণের বুলিয়ান ডাটা কনফিগার করা যেত । এবং এটা তৈরি করতে ১১ মাস সময় লাগে । কিন্তু কিছু মাস পর মার্ক ২ ডেভেলপ করা হয় যা মার্ক ১ থেকে ৫ গুন বেশি দ্রুত কাজ করতে পারে এবং এতে মাত্র ২৪০০ ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করা হয়েছে । ঠিক একই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এনিয়াক (ইলেক্ট্রনিক নিউমেরিক্যাল ইন্টিগ্রেটর কম্পিউটার ) আবিস্কার করেন জন মসলি ও জে প্রোস্পার একার্ট । এই যন্ত্রটি মার্ক ২ থেকে ও অনেক দ্রুত কাজ করতে সক্ষম ৮০ বাইট পর্যন্ত ডাটা সংরক্ষণ করতে পারত। এই যন্ত্র ১ সেকেন্ড সময়ে ৫০০০ গুন যোগ ও বিয়োগ করতে পারত । এই যন্ত্রের অজন ছিল ১০ টন ২০০ কিলোওয়াট পাওয়ার লাগত ১৮০০০ ভ্যাকুয়াম টিউব ও ১৫০০ রিলে হাজার হাজার রেজিস্টোর, ক্যাপাসিটর ও ইন্ডাক্টর ব্যবহার করা হয়েছে ।
Fig:First Electronic Digital Computer which is used to World War 2 ENIAC Computer
আধুনিক কম্পিউটার
এলান তুরিং কে আধুনিক কম্পিউটারের প্রবক্তা বলা হয় কারন তিনি প্রথম ১৯৩৬ সালে তার এক প্রবন্ধে আধুনিক কম্পিউটার সম্পর্কে বলেন । সেই সময় তুরিং একটি সাধারন যন্ত্রের নাম বলেন সেটা হল ইউনিভার্সাল কম্পিউটিং মেশিন যা পরবর্তীতে ইউনিভার্সাল তুরিং মেশিন নামে পরিচিত হয় । তিনি এটা প্রমান করতে সক্ষম হন যে এই মেশিন দিয়ে গণনা যোগ্য যেকোন সংখ্যাকে গণনা করা সম্ভব । এই মেশিন প্রোগ্রামের সাহায্যে কাজ করে এবং তথ্য উপাত্ত সমুহ একটি টেপ এ সংরক্ষন করে রাখে । ভন নিউম্যান যাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয় তিনি এলান তুরিং এর এই তত্বকে গ্রহন করেছেন ।

Fig: Alan Turing
মোবাইল কম্পিউটার
প্রথম মোবাইল কম্পিউটার অনেক বড় ছিল এবং এটা প্রধান পাওয়ার দিয়ে চলতো । আইবিএম ৫১০০ তার একটা উদাহরণ । তারপর অবসবর্ণ ১ ও কমপ্যাক পোর্টেবলকে অনেক হালকা মনে হলেও তার জন্য পাওয়ারের দরকার ছিল । প্রথম ল্যাপটপ গ্রিড কম্পাস এসব থেকে বেরিয়ে প্রথম ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় । কিন্তু এই ডিভাইস জনপ্রিয় হয় ২০০০ এর দশকে । স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট বিভিন্ন ধরণের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে এবং টা বর্তমানে বাজার দখল করে নিয়েছে । এইসব ডিভাইস সিস্টেম অন চিপ টেকনোলজি ব্যবহার করার কারনে এর চিপের আকার একটি কয়েনের সমান হয়েছে ।
Laptop Computer
কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে
একটি কম্পিউটারের সাধারনত তিনটি অংশ থাকে ১। ইনপুট অংশ ২। প্রসেসিং অংশ ৩। আউটপুট অংশ ৪। মেমোরি অংশ
Fig: Basic Function of Computer
ইনপুট ডিভাইস ও তাদের কাজঃ
কম্পিউটারে ডাটা বা উপাত্ত প্রেরণ করার জন্য যেসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয় তাদের ইনপুট ডিভাইস বলে । যেমনঃ কি বোর্ড, মাউস, ওএমআর, জয়ষ্টিক, সিডিরম ইত্যাদি ।মাউসঃ মাউস একটি বহুল ব্যবহৃত ইনপুট যন্ত্র । মাউস দিয়ে কোন কিছু সিলেক্ট করে কম্পিউটার এ কাজের নির্দেশ প্রদান করা যায় ।

Computer Mouse
কি বোর্ডঃ কি বোর্ড একটি ইনপুট যন্ত্র যার সাহায্যে কম্পিউটারের বেশিরভাগ ইনপুট নির্দেশের কাজ করা হয়ে থাকে। বেশিরভাগ কি বোর্ডে ১০৪ টি কি থাকে কিন্তু আমেরিকান কি বোর্ড ১০১ টি থাকে । F1 থেকে F12 কি গুলোকে ফাংশন কি বলে । A-Z কি গুলোকে Alphabetic কি বলে। 0-9 কি গুলোকে নিউমেরিক কি বলে । এছাড়াও শিফট কি, ক্যাপ্স লক কি, ইন্টার কি, ডিলিট কি, কন্ট্রোল কি সহ আরও অনেক কি আছে এবং তাদের ব্যবহারও একেকটার একেক রকম ।

Computer Keyboard
মেমোরি ডিভাইসঃ কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য উপাত্ত কম্পিউটারের মেমোরিতে জমা থাকে। কম্পিউটারের মেমোরি প্রধানত দুই ধরনের ১। প্রাইমারী মেমোরি ২। সেকেন্ডারি মেমোরি
প্রাইমারী মেমোরিঃ প্রাইমারী মেমোরিতে কম্পিউটার চালু থাকা অবস্থায় যে ডাটা উপাত্ত নিয়ে কাজ করা হয় সেই ডাটা থাকে কিন্তু কম্পিউটার বন্ধ করলে সেই ডাটা মুছে যায় । তাই কাজের সাথে সাথে ডাটা সেকেন্ডারি মেমোরিতে সেইভ করতে হয় । যেমনঃ RAM

RAM
সেকেন্ডারি মেমোরিঃ সেকেন্ডারি মেমোরিতে ডাটা স্থায়ী ভাবে সেইভ করা থেকে এবং ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী তা আবার ব্যবহার করতে পারে । কম্পিউটার বন্ধ হয়ে গেলেও ডাটা মুছে যায় না । যেমনঃ হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইভ, সিডিডিস্ক, মেমোরি কার্ড ইত্যাদি ।

Hard Disk Drive
প্রসেস ইউনিটঃ কম্পিউটারে প্রেরিত যাবতীয় তথ্য উপাত্ত প্রসেস করে তা আউটপুটে প্রেরণ করাই প্রসেস ইউনিট এর কাজ। যেমনঃ লজিক ইউনিট, কন্ট্রোল ইউনিট, রেজিস্টার ইউনিট ইত্যাদি।

Computer Processor
আউটপুট ইউনিটঃ প্রসেস ইউনিট থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত ব্যবহারকারীর কাছে প্রদর্শন করার যন্ত্রকে আউটপুট যন্ত্র বলে । যেমনঃ মনিটর, প্রিন্টার, প্লটার ইত্যাদি ।

Computer Monitor
কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ
কম্পিউটারের প্রধানত দুইটি অংশ থাকে ১। হার্ডওয়্যার অংশ ২। সফটওয়্যার অংশহার্ডওয়্যারঃ কম্পিউটারের যে অংশ গুলোকে আমরা চোখে দেখি সে অংশগুলোকে হার্ডওয়্যার বলে । যেমনঃ মাউস, কি বোর্ড, মনিটর, স্পীকার, ক্যাসিং, মাদারবোর্ড, প্রসেসর ইত্যাদি ।
সফটওয়্যারঃ কম্পিউটারকে কাজের উপযোগী করার জন্য এক ধরেনের প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয় তাদের সফটওয়্যার বলে । অথবা আমরা বলতে পারি হার্ডওয়্যারকে প্রান দেয়ার জন্য যে প্রোগ্রাম ব্যবহার করি তাদের সফটওয়্যার বলে । সফটওয়্যার তিন ধরনের হয়ে থাকে – ১। অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার ২। অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ৩। থার্ড পার্টি সফটওয়্যার
অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারঃ কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার গুলোকে প্রাথমিকভাবে কাজের উপযোগী করা এবং ফার্মওয়্যার এর মধ্যে সংযোগ সাধন করে ।
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারঃ আমরা কম্পিউটারে যে যাবতীয় কাজ করি তা অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ব্যবহার করে করে থাকি। যেমনঃ লেখালেখির কাজ বা অফিসের কাজের জন্য অফিস প্রোগ্রাম ব্যপকভাবে ব্যবহার করে থাকি ।
থার্ড পার্টি সফটওয়্যারঃ আবার লোগো, ব্যানার, ছবি এডিটিং এর জন্য এডোবি সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি । গান শুনা ছায়াছবি দেখার জন্য বিভিন্ন প্লেয়ার ব্যবহার করা হয় । এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ও এক ধরনের থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ।
কম্পিউটারের ভাষা
কম্পিউটারের ভাষাকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে ১। মেশিন ভাষা ২। এসেম্বলি ভাষা ৩। হাই লেভেল ভাষামেশিন ভাষাঃ কম্পিউটার সাধারনত ০ ,১ ছাড়া আন্য কিছু বুজতে পারেনা । কিন্তু শুধুমাত্র ০ ১ ব্যবহার করে প্রোগ্রাম লেখা সময় সাপেক্ষ ও অনেক জটিল । এই ভাষা মেশিন সরাসরি বুজতে পারে তাই একে মেশিন ভাষা বলে ।
এসেম্বলি ভাষাঃ মেশিন ভাষায় প্রোগ্রাম লেখার জটিলতার কারনে এসেম্বলি ভাষা আবিষ্কার হয় এবং সাংকেতিক চিহ্ন ও বর্ণ ব্যবহার করে প্রোগ্রাম লেখা হত এবং কম্পাইলার ব্যবহার করে তা আবার মেশিন ভাষায় রূপান্তরিত করা হত । যেমনঃ ফরট্রন, অ্যাডা, কবল ইত্যাদি ।
হাই লেভেল ভাষাঃ বর্তমানে কম্পিউটারের ভাষাকে অনেক সহজে এবং ব্যবহারকারীর সহজ ও সাবলীলভাবে এই ভাষায় প্রোগ্রাম লিখতে পারে । এই ভাষাকে আবার কম্পাইলার ব্যবহার করে মেশিন ভাষায় রূপান্তরিত করে কাজ সম্পাদন করা হয় । হাই লেভেল ভাষা অনেক সহজ হওয়ার কারনে অধিকহারে ব্যবহৃত হচ্ছে ।যেমনঃ জাভা,সি++, পাইথন ইত্যাদি ।
কম্পিউটারের ব্যবহার
বর্তমান বিশ্বের সব জায়গায় এবং প্রায় সকল কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে নিচে কয়েকটি তুলে ধরা হলঃ
ব্যবসাঃ ব্যবসার কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় কারন অনেক বড় বড় হিসাব কম্পিউটার নির্ভুলভাবে কম সময়ে সম্পাদন করতে পারে । তাছাড়াও বিজনেস এনালাইসিস, ডাটা ম্যানেজমেন্ট, ওয়ারহাউস ম্যানেজমেন্ট, সেলস এনালাইসিস, এমপ্লয়ী ম্যানেজমেন্ট, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, বাজেট, পে-রোল ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি ।
ব্যাংকিংঃ ব্যাংকিং খাতে কম্পিউটার ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে যেমনঃ ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, গ্রাহকদের সেবা, অনলাইন সেবা, এটিএম সেবা, আয় ব্যয় হিসাব, মুনাফা হিসাব খুব সহজে রাখা যায়।
শিক্ষাঃ বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে, রেজাল্টশিট তৈরি, ভর্তি, ছাত্র ছাত্রীর হিসাব, শিক্ষার্থীর টিউশন ফি, অনলাইন পড়াশুনা, গবেষণা, নতুন বই, জার্নাল, শিক্ষার্থীর পারফর্মেন্স এনালাইসিস সহ প্রায় প্রতিটি কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় ।
সরকারী কাজেঃ সরকারী কাজে কম্পিউটার ব্যবহারের কারনে কাজের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন ঘরে বসে অনেক কাজ করা যায়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে জানা যায়। জন্ম নিবন্ধন, আয় ব্যয় হিসাব, আয়কর দাখিল, ভুমির পরিমাপ জানা, ই টেন্ডার, পাসপোর্ট, পুলিশ সাপোর্ট সহ অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।
চিকিৎসাঃ কম্পিউটার আবিস্কারের ফলে চিকিৎসাক্ষেত্রে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে । ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বসে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা গ্রহন করা যায়। অনেক জটিল রোগ সম্পর্কে জানা যায় এবং এর প্রতিষেধক সম্পর্কে জানা যায়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যায়। ল্যাব টেস্ট ও বিভিন্ন ধরনের টেস্ট নির্ভুলভাবে করা যায়।
এছাড়াও প্রতিরক্ষা কাজে, যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে, ইমেজ প্রোসেসিং, রোবটিক্স এর সাহায্যে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা হয় ।
কম্পিউটার ব্যবহারের সুবিধা
কম্পিউটারের ব্যবহারের সুবিধা অনেক তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বর্ণনা করা হলদ্রুতগতিঃ কম্পিউটার কোন কাজ মানুষের চেয়ে বা অন্য যে কোন যন্ত্রের চেয়ে দ্রুত কাজ করতে পারে । যেমন কয়েক হাজার লাইনের একটি হিসাব যেটা মানুষের করতে কয়েক মাস সময় গেলে যায় কম্পিউটার তা কয়েক সেকেন্ড সময়ে করে দিতে পারে ।
নির্ভুলতাঃ কম্পিউটার তার প্রাপ্ত ডাটা ব্যবহার করে নির্ভুল তথ্য প্রধান করতে পারে যা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় ।
মেমোরিঃ কম্পিউটারের কাছে জমাকৃত তথ্য উপাত্ত প্রচুর পরিমানে জমা রাখতে পারে এবং বহুদিন পর্যন্ত মনে রাখতে পারে। যা মানুষের পক্ষে একই তথ্য বহুদিন মনে রাখা সম্ভব নয়। তাছাড়া ছায়াছবি, ইমেজ, ভিডিও, গান ইত্যাদি মেমোরিতে রাখা যায় ।
কম্পিউটার ব্যবহারের সুবিধা
- কম্পিউটারের কোন ক্লান্তি নাই ।
- কম্পিউটার পেপার ও কায়িক শ্রম কমিয়ে দিয়েছে ।
- বিশ্বস্ত এবং কোন ভুল করে না ।
- একটানা বহুদিন কাজ করতে পারে ।
- একাধারে অনেক কাজ করতে পারে ।
- কম্পিউটার নিজে থেকে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ।
- অন্যের উপর নির্ভরশীল।
- পরিষ্কার পরিবেশের প্রয়োজন ।
- কম্পিউটারের কোন বিচার বুদ্ধি নাই ।
কম্পিউটারের প্রকারভেদ
কম্পিউটারের গতি ও কাজের ভিত্তিতে কম্পিউটারকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায় যেমনঃপার্সোনাল কম্পিউটারঃ ব্যক্তিগত কাজের উপর ভিত্তি করে এই কম্পিউটার তৈরি করা হয়েছে । ব্যক্তিগত কাজ ছাড়াও অফিসের নানাবিধ কাজ পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। যেমন ওয়ার্ড প্রোসেসিং, ওয়ার্কশিট, হিসাব নিকাশ, ইন্টারনেট সার্ফিং ও যোগাযোগের কাজে এই কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে।
মাইক্রো কম্পিউটারঃ এক সাথে ১০০ জন ব্যবহারকারীর এক্সেস সহ এই কম্পিউটার ডিজাইন করা। সাধারণত বড় বড় সফটওয়্যার ফার্মে এক সাথে অনেকজন কাজ করার সুবিধা প্রধান করে থাকে । বড় বড় কোম্পানিতেও এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় ।
মেইনফ্রেম কম্পিউটারঃ এক সাথে ২৫০ এর অধিক ব্যবহারকারী এক সাথে ডাটা ব্যবহার করতে পারে এবং একই সফটওয়্যার এক্সেস করতে পারে। সাধারনত শেয়ারবাজার, মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে, মোবাইল অপারেটর কোম্পানিতে এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় ।
সুপার কম্পিউটারঃ সুপার কম্পিউটারকে সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটার বলে। কারন এটা প্রতি সেকেন্ডে কয়েক বিলিয়ন ডাটা প্রসেস করতে পারে। পরমাণু গবেষণায়, নাসা মহাকাশ গবেষণায়, মিসাইল পরিচালনায় ও প্রতিরক্ষার কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও আবহাওয়া, ডাইনামিক ইমেজ প্রোসেসিং, হাই গ্রাফিক্স মুভি তৈরিতেও এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় ।
For More Details ... Visit ... wikipedia
More Abour Computer
History of ComputerHistory of ComputerHistory of ComputerHistory of Computer History of ComputerHistory of ComputerHistory of ComputerHistory of ComputerHistory of ComputerHistory of ComputerHistory of Computer